ইকবাল ফারুক, চকরিয়া::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দোকানে পৃথক অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি ও মজুদের দায়ে ২৬জন দোকানদারের কাছ থেকে ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন শনিবার (২১ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে একটানা সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তাঁরা উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়াছড়া ষ্টেশন, খুটাখালী বাজার, ডুলাহাজারা বাজার, বদরখালী বাজার ও চকরিয়া পৌর সদরের ২৬টি ভোগ্য পণ্যের দোকানে অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি ও মজুদের দায়ে ২৬জন দোকানদারের কাছ থেকে ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। পৃথক অভিযানের সময় পুলিশ, আনসার সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, করোনা ইস্যুকে পুঁজি করে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে ভোগ্যপন্য বিক্রির অভিযোগ পেয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং কর্মসূচীর আওতায় শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের পৃথক অভিযান চালানো হয়। এ সময় পৌর এলাকার তিনটি ভোগ্য পণ্যের দোকানে অভিযান চালিয়ে তিন দোকান মালিকের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা, বানিয়ারছড়া স্টেশনের এক মিল মালিক ও দুই মুদির দোকানদারের কাছ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও বদরখালী বাজারের ৫টি ভোগ্যপণ্যের দোকানে অভিযান চালিয়ে ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অপরদিকে শনিবার সকাল ১০টা থেকে একটানা সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা খুটাখালী ও ডুলাহাজারা বাজারের ১৫টি ভোগ্যপণ্যের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. তানভীর হোসেন। এ সময় অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি ও মজুদের দায়ে ১৫জন দোকানদারের কাছ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং কর্মসূচীর আওতায় এসব অভিযান চালানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চালের আড়তদার, মিল মালিক ও মুদির দোকানদারদের কাছে প্রায় ৪০০ মে:টন চাল মজুত রয়েছে। ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা যাতে এসব চাল অতিরিক্ত দামে গ্রাহকদের নিকট বিক্রি করতে না পারেন সে ব্যাপারে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে ট্যাক অফিসার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুতকৃত এসব চাল প্রতিদিন নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির পর সন্ধ্যায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে মজুদের স্টকসহ জানানোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ইউএনও আরও বলেন, কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত দামে ভোগ্যপণ্যসমুহ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি না করার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের প্রতি সতর্ক করা হয়।
এছাড়া যেসব ভোক্তা অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাড়িতে মজুদ করতে চায় তাদের নাম ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে প্রশাসনের কাছে জানানোর জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং কর্মসূচীর আওতায় আগামীতেও ভ্রাম্যমান আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ইউএনও নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান।
পাঠকের মতামত: