কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

কয়লা আমদানি

উৎপাদনে যাচ্ছে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র

কয়লা সংকটের কারণে প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর আবারও শনিবার থেকে উৎপাদনে যাচ্ছে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা আমদানি করা হয়েছে। এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত ৩১ অক্টোবর থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৭০ হাজার টন কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়েছে। এরপর একই দিন বিকেল থেকে কয়লা খালাসের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়াও আগামী রোববার ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ মাতারবাড়ীতে আসবে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের মাতারবাড়ী সাইট অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচলন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, আইনি জটিলতা শেষে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে এক বছরে ৩৫ লাখ মেট্রিকটন কয়লা আমদানি করার জন্য মেঘনা গ্রুপ ও বিরলা নামে যৌথ একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে জেটিতে জাহাজ ভিড়েছে। ফলে এক মাস বন্ধ থাকার পর শনিবার থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবারও উৎপাদনে যাচ্ছে ৬০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট।

মনোয়ার হোসেন মজুমদার উল্লেখ করেন, এখন বিদ্যুতের চাহিদা আগের চেয়ে কমেছে। তবে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় ইউনিটের আরও ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে যাবে।

বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষে মাতারবাড়ীর ১ হাজার ৬০০ একরের পরিত্যক্ত লবণ মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৫১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিডেট। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ২৮ আগস্ট দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়।

কোল পাওয়ারের সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছরের নভেম্বরে এক বছরে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহের জন্য প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে গিয়ে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় ১০ মাস দেরি হয়। এর মধ্যে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় গত জুলাইয়ে। এ কারণে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।

কোল পাওয়ারের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকিউরমেন্ট) মোহাম্মদ আদনান ইব্রাহিম বলেন, গত সেপ্টেম্বরে উচ্চ আদালতে কয়লা আমদানি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন হয়ে গেছে। এরপর অক্টোবরে কয়লা আমদানির জন্য মেঘনা গ্রুপ ও বিরলা নামে যৌথ প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ওই প্রতিষ্ঠান আগামী এক বছরে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করবে। সূত্র : প্রথম আলো

পাঠকের মতামত: