নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে নাগরিক সমাজের সংলাপে জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা নাগরিক সমাজের সঙ্গে যে মতবিনিময় করেছি, সেখানে সকলের অভিমত হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ স্থানীয় নির্বাচন করার কারণে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বাড়বে। তাদের টেস্ট হয়ে যাবে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে যে সাপোর্ট দরকার হবে, তা নিশ্চিত হয়ে যাবে। গতকাল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
ড. তোফায়েল আহমেদ ওই কমিশনের একজন সদস্য। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমন্বিত নির্বাচন ব্যবস্থায় আনার এখন মোক্ষম সময় বলে মন্তব্য করেন ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা যদি সিস্টেম করতে পারি যে, একটা কমিপ্রহেন্সিভ আইন হবে। সেই আইনের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠান চলে আসবে। এতে একটা তফসিল দিয়ে স্থানীয় সরকারের সবগুলো নির্বাচন করতে পারবো। তাহলে নির্বাচন অনেক ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী হবে। তিনি বলেন, হিসাব করে আমি দেখেছি, গত কমিশন যে স্থানীয় নির্বাচন করেছে এতে ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ওই নির্বাচন আয়োজনে ১৯ থেকে ২০ লাখ লোক লেগেছে। ভোটগ্রহণ করতে ২২৫ দিনের মতো সময় লেগেছে। তাই স্থানীয় নির্বাচনে যদি পার্লামেন্টারি সিস্টেম নিয়ে আসি। তাহলে ইউনিয়ন, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনে যদি একই সিস্টেমে ভোট করতে পারি, তাহলে খরচ চলে আসবে ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে। লোকবল লাগবে আট লাখ। সময় লাগবে ৪৫ দিন। ওই সিস্টেমে যেতে অধ্যাদেশ করার প্রয়োজন হবে। তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে স্থানীয় সরকারের পাঁচ প্রতিষ্ঠান- সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদে ভোট করতে পৃথক পাঁচটি আইন আছে। এসব আইন দিয়ে পৃথক পৃথক নির্বাচন করতে গেলে তা জাতীয় সংসদের আগে আয়োজন করা সম্ভব হবে কিনা- তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে।
জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও পার্লামেন্টারি সিস্টেম আনার কথা চিন্তা করা হচ্ছে জানিয়ে ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যেমন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন, তেমনি নির্বাচিত স্থানীয় সরকার সদস্যরা তাদের সভায় প্রধান নির্বাচন করবেন। আর সব স্থানীয় সরকার গঠন হবে এক আইনে, এক নির্বাচনে। সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বৈঠকে আলোচনা হয়েছে প্রেসিডেন্ট পদে পরোক্ষ নয়, প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচন হতে হবে। রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ হওয়া উচিত। প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই, অনলাইন ভোট পদ্ধতির প্রবর্তন এবং ‘না’ ভোট ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: