শহীদ উল্লাহ, টেকনাফ::
কক্সবাজারের টেকনাফে বেড়েছে নতুন নতুন মানুষের আনাগোনা। ওই এলাকার অলিগলি, হাটবাজার, মসজিদ, মার্কেট, গাড়ি, সাগর পাড় এমনকি পর্যটন স্পটের ব্যবসা বাণিজ্য, দোকানপাট, কৃষি কাজসহ নানা কর্মস্থলে এসব মানুষের বিচরণ। রাস্তাঘাটে প্রকাশ্যে এভাবে অপিরিচিত মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রাম থেকে শহরে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক কাজ করছে।
দীর্ঘ দুই মাস ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের টেকনাফের বিভিন্ন জায়গায় অবাধে চলাফেরা করতে দেখেছেন স্থানীয়রা।
টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দা জাহেদ হোসেন বলেন, নতুন নতুন মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় আমরা অনেক ভয়ভীতির মধ্যে আছি। এর আগে তাদের কখনো দেখিনি। তারা কী রোহিঙ্গা নাকি সন্ত্রাসী নাকি প্রশাসনের লোকজন কিছুই বুঝতে পারছি না।
গত ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে প্রশাসনের কোনো প্রকার তৎপরতা না থাকায় টেকনাফে ১৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। বিভিন্ন ভাড়া বাসায়, আশ্রয় শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গারা ঢুকে বসবাস করছে। রোহিঙ্গাদের দেখা যাচ্ছে রাস্তাঘাটে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে। যার ফলে স্থানীয়রা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে টেকনাফ থেকে অনেক মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। এতে নতুন মানুষের আনাগোনা দেখে ভয়ভীতি কাজ করছে স্থানীয়দের।
স্থানীয় শ্রমিক নুরুল আমিন বলেন, আমরা একদিন ৫-৭শ টাকা দিয়ে কাজ করি, রোহিঙ্গারা কাজ করে ৩শ টাকা দিয়ে। তাই দেশের শ্রমিকরা কাজ পায় না। ফলে স্থানীয় সাধারণ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
টেকনাফ সাবরাং নয়াপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জলিল আহমদ জানান, নয়াপাড়া বাজারে আমার দোকান থেকে রাতের অন্ধকারে ঢুকে ৪ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে কে বা কারা। এরই মধ্যে অপরিচিত লোকের আনাগোনা দেখে মনে হচ্ছে- দিন দিন অপহরণ, চুরি, ডাকাতি বেড়ে যাবে। প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং চাকমা পাড়া এলাকায় তুয়াইমি চাকমা বলেন, আমার বাড়িতে ৮/১০ জন ডাকাত ঢুকে সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ৬ লাখ টাকা, সাত ভরি স্বর্ণ নিয়ে গেছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এভাবে কী করে জীবন চালাবো, ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছি তাই।
সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর বাজারে বোরকা পরে মেয়ে সেজে দু’জন অপহরণ চক্রের সদস্যকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পরে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, আমরা সব বিষয়ে লক্ষ্য করছি। স্থানীয়দেরও সতর্ক থাকতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে অভিযান শুরু করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
পাঠকের মতামত: