ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ৪ কোটি ৯২ লাখ কোটি টাকা। আজ বুধবার চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছেন।
বন্যার পানি নামার পর মাঠে চিত্র পর্যালোচনা করে এই ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে। গত আগস্টের শেষের দিকে ও চলতি সেপ্টেম্বর মাঝামাঝি সময় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে চিংড়ি ঘের, মৎস্য প্রকল্প ও পুকুর-দিঘি ডুবে যায়।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে উপকূলীয় সাতটি ইউনিয়নের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি প্রবেশ করে উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে ২৭০ পুকুর-দিঘি, ১৩০টি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৭০ টন মাছ ও ২৫ টন চিংড়ি ভেসে গেছে। এতে ৭৫ লাখ টাকার মাছ ও ৫৫ লাখ টাকার চিংড়ি ছাড়াও অবকাঠামোসহ ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এর আগে গত আগস্টের মাঝামাঝি হওয়া বন্যার ক্ষতি পরিমাণ ছিল দ্বিগুণ। ওই সময় ৪টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৪৫ হেক্টর জমিতে ৩৭০টি পুকুর-দিঘি ও খামার পানিতে ডুবে যায়। এতে ১১২ টন মাছ ভেসে যায়। পুকুর, দিঘি ও মাছের খামারে বন্যার পানি প্রবেশ করে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
মাছচাষিরা জানিয়েছেন, উপজেলার সাহারবিল, বরইতলী, পশ্চিম বড়ভেওলা, পূর্ব বড় ভেওলা, ভেওলা মানিকচর (বিএমচর), বদরখালী, কাকারা, ঢেমুশিয়া, ফাঁসিয়াখালী ও পৌরসভায় বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বেশির ভাগ পুকুর, দিঘি ও মাছের প্রকল্পের মাছ ভেসে গেছে।
পশ্চিম বড় ভেওলার মাছ চাষি জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এবার বন্যায় পাঁচ লাখ টাকার পোনা ভেসে গেছে। ভাগ্য ভালো ছিল, বন্যার আগে মাছ বিক্রি করেছিলাম। আমার মতো আরও শত শত মৎস্যচাষি ক্ষতির মুখে পড়েছে।’
চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারহান তাজিম বলেন, ‘এ বছরই শুধু বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে একাধিকবার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ২০৭ টন মাছ ও চিংড়ি। গত আগস্টের শেষ ও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দুই বার বন্যায় ৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা মৎস্য বিভাগে ক্ষতি হয়েছে।’
পাঠকের মতামত: