কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রোববার মধ্যরাতে

সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রোববার মধ্যরাতে। এরমধ্যে সাগরে মাছ শিকারে যেতে কক্সবাজার উপকূলে নোঙর করা ট্রলারে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। তবে সবার মাঝে বিরাজ করছে সাগর যাবার আনন্দ। আশা করছেন, সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়বে সামুদ্রিক মাছ।

সরজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার বাঁকখালী নদীর উপকূলে সারি সারি নোঙর করা মাছ ধরার ট্রলার। প্রতিটি ট্রলার সেজেছে নতুন সাজে। ট্রলারে টাঙানো হয়েছে নতুন পতাকা। উপকূলের ঘাটগুলোতে আনা হচ্ছে বড় বড় জাল। শেষ মুহুর্তে জালের মেরামত কাজও দেখছেন জেলেরা। তারপর দ্রুত জালগুলো তোলা হচ্ছে ট্রলারে। একই সঙ্গে মজুদ করা হয়েছে খাদ্য, ড্রামসহ নানা সামগ্রী। ব্যস্ততার যেন শেষ নেই জেলে ও ট্রলার মালিকদের।
জেলেরা বলছেন, ৬৫ দিন পর সাগরে যাবার আনন্দে মেতেছেন তারা।

৬ নম্বর ঘাটে নোঙর করা এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষ হচ্ছে রোববার মধ্যরাতে। তাই মনে খুব আনন্দ। কারণ ৬৫ দিন বন্ধের কারণে সংসার নিয়ে খুবই কষ্টের মধ্যে ছিলাম। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে সাগরে মাছ শিকারে যাব।
ফিশারি ঘাট এলাকার জেলে ছৈয়দ আলম বলেন, ট্রলারে তেল, জাল, ড্রাম, রশি ও খাদ্যসহ সব ধরনের সামগ্রী মজুত করা হয়েছে। আমরা ১৭ জন জেলে ট্রলারে অবস্থান করছি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১০ দিনের জন্য সাগরে মাছ শিকারে যাব।
আরেক জেলে আমিনুল ইসলাম বলেন, ট্রলারে এসে মন ভালো হয়ে গেছে। কারণ এখন সাগরে যাব, মাছ ধরব আর অবতরণ কেন্দ্রে এসে মাছ বিক্রি করব। সংসারটা ভালোভাবে চলবে।
৬ নম্বর ঘাটের এফবি ফরিয়াদ ট্রলারের মালিক ইউসুফ আলী বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। তাই ট্রলারে ২০ জন জেলে অবস্থান করছে। তাদেরকে ৩ লাখ টাকার মালামাল ট্রলারে তুলে দিয়েছি। আশা করছি, সোমবার সকালে সাগরে শিকারে রওনা হবে জেলেরা।
সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ ছিল বরফ মিলগুলো। এখন বরফ মিলগুলো চালু করতে চলে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। আর মিলগুলো খোলায় পুনরায় কাজে ফিরছে শ্রমিকরা।
বিমানবন্দর এলাকার বরফ মিল মালিক তৈয়ব বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা বরফ মিলে বরফ উৎপাদন বন্ধ ছিল। যার কারণে শ্রমিকদেরও ছাঁটাই করতে হয়েছিল। কিন্তু এখন নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে, তাই শ্রমিকরা কাজে ফিরেছে। এখন যন্ত্রপাতিগুলো মেরামত করা হচ্ছে। আর রোববার থেকে বরফ উৎপাদন শুরু হবে।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাগরে যেতে প্রস্তুত হচ্ছে জেলেরা। আর নিষেধাজ্ঞার সুফল মিলবে বলেও আশা করছেন তারা।
কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ সমবায় সমিতি লিমিটেডের মো. ওসমান গণি টুলু বলেন, জেলেদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এখন প্রতিটি ট্রলারে উৎসব চলছে। কারণ সবাই নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে সাগরে যাবে। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন, শুধু মাছ ধরতে যাওয়া বাকি রয়েছে। আশা করি, রোববার মধ্যরাত থেকে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে যাবে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, কক্সবাজারে নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৬৪ হাজার ৩৯৪ জন। আর নিবন্ধিত নৌ-যান রয়েছে ৫ হাজার ১১৩টি।

পাঠকের মতামত: