সেখানেই শেষ নয় জার্সির ওপরও ক্ষেপে যায় ব্রাজিলিয়ানরা। তাদের মনে হয় ‘যত নষ্টের গোড়া ওই জার্সি। ’ সাদা রঙা শার্টে নীল কলার, সাদা শর্টস এবং সাদা মোজাকে ‘দেশপ্রেমহীন’ মনে হতে থাকে তাদের।
এরপর পতাকা রঙের জার্সিতে ফেরে ব্রাজিল। শুরু হয় নতুন পথচলা। ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন নতুন জার্সির নকশা করার জন্য একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। কোহেইও দ্যা মাইন্যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয় জার্সি আঁকার প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন। শর্ত ছিল, হলুদ, সবুজ, নীল ও সাদা; অর্থাৎ পতাকার সব রং থাকতে হবে নতুন নকশায়। জয়ী নকশার জার্সি পরিধান করা হবে ১৯৫৪ সালে আসন্ন সুইজারল্যান্ডের বিশ্বকাপে।
তখন পত্রপত্রিকায় আঁকাআঁকি করতেন ১৮ বছর বয়সী আলদির গার্সিয়া শ্লী। উরুগুয়ে সীমান্তের কাছাকাছি ছোট শহর রিও গ্রান্ডে ডো সুল-এ নিজ বাড়িতে বসে চারটি রঙের ১০০টি ভিন্ন সমাহার প্রস্তুত করেন তিনি। কিন্তু দিনশেষে উপলব্ধি করেন, জার্সিটা হতে হবে পুরোটাই হলুদ, কলার হবে সবুজ, সাথে পরা হবে সাদা মোজা।
রঙের এমন ‘ঐকতান’ এবং নকশার সরলতার জন্য মোট ৪০১টি প্রতিদ্বন্দ্বী নমুনার মধ্যে গার্সিয়ার এই নকশা বিচারকদের নজর কাড়তে সমর্থ হয়। এই নতুন জার্সি পরেই ১৯৫৪ সালে মার্চে বিশ্বকাপে খেলতে নামে ব্রাজিল দল। প্রথম ম্যাচেই চিলিকে হারায় ১-০ গোলে। এর পরের বিশ্বকাপে অর্থাৎ ১৯৫৮ সালে ফাইনালে সুইডেনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে পায় ব্রাজিল। তবে এ ফাইনাল ম্যাচে হলুদ নয়, অন্য নীল জার্সিটিই পরেছিল সেলেসাওরা।
হলুদ জার্সি পরে ব্রাজিল প্রথমবার জুলে রিমে হাতে তোলে ১৯৬২ সালে। তবে সেসময়ের গণমাধ্যম সাদাকালো ছিল বলে জার্সির রং দেখার সৌভাগ্য হয়নি বিশ্ববাসীর। কিন্তু দু-দুইবার বিশ্বকাপ জিতেও যেন ক্ষান্ত হয়নি ব্রাজিল। আবার ১৯৭০ সালে মেক্সিকোতে তারা তৃতীয়বারের মতো জিতে নেয় ফুটবল বিশ্বকাপ ট্রফি। আর রঙিন টেলিভিশন পর্দায় সম্প্রচারিত হয়েছিল বলে ফুটবল প্রেমীদেরও প্রথমবারের মতো সৌভাগ্য মেলে বিখ্যাত হলুদ জার্সি দেখার।
সূত্র: বিবিসি
পাঠকের মতামত: