বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের ৯ বছরের শিশু নুসরাত জাহান শিক্ষকের নির্যাতনে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার বাবা সুমন মিয়া। সে দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নুসরাতের মা তানিয়া আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, নিষ্ঠুর শিক্ষক আমার বুকের ধনকে মেরে ফেলল। আমি এর বিচার চাই।
এ ঘটনায় ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন সুমন মিয়া। তার অভিযোগ, করোনাকালে স্কুল বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমিতে পাঠদান চলছিল। সেখানে সাময়িক পরীক্ষাও নেয়া হয়। ওই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় নুসরাতকে বকাঝকা করেন ও বেত দিয়ে পেটান ওই শিক্ষক। এতে অভিমানে নুসরাত ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি নির্দেশে দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। দুই সপ্তাহ আগে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে স্কুলটি খুলে পাঠদান শুরু হয়। গত সপ্তাহে সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হয়।
আরো পড়ুন: শিক্ষকের সঙ্গে অভিমান করে ফাঁস দিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী
খাজুরিয়া গ্রামের কয়েকজন অভিভাবক জানান, করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে ভালো করে পড়াশোনা করতে পারেনি। ফলে অনেকেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এ কারণে শিক্ষকরা তাদের গালাগাল ও মারধর করেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা বাড়িতেও জানিয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক সফিকুল ইসলাম জানান, মারধর নয়, ফেল করায় সামান্য শাসন করা হয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক নয়।
দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. নয়ন তালুকদার বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ছাত্রছাত্রীদের গায়ে হাত দেয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। এরপরও কেন মারধর করা হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীর বাবা একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠিয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পাঠকের মতামত: