১১ মাস যাবত নির্মাণাধীন একটি স্কুল ভবনের ৩ তলার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। কদিন পরেই শুরু হবে ৪র্থ তলার ছাদ ঢালায়ের কাজ। কিছুদিন আগে ওই নির্মাণাধীন ভবনে আংশিক জমি রয়েছে এমনটাই দাবী করে ওই ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে জহির উদ্দিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। একসময় তিনি ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি সভাপতি থাকাকালীন এমন দাবী না করে বর্তমান সময়ে এসে এমন অন্যায় দাবী করায় এতে হতবাক শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। স্কুলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার কারনে জহির উদ্দিন চৌধুরীর ভূমিদস্যুতার মুখোশ উম্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় যে, বর্তমানে পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন উখিয়া টেকনাফের দুবার নির্বাচিত জননন্দিত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি। তাঁরই একান্ত প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি একটি পাঁচ তলার সরকারি ভবন পায়। গত বছরের জানুয়ারী মাসে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব শফিউল আলম রত্না পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্প্রসারিত ৫ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবণ নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। প্রায় ২ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা বাজেটে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস নজরুল কনষ্ট্রাকশন ইতিমধ্যে কাজের ৭০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত করে। এমন সময় ওই নির্মাণাধীন ভবনে নিজের আংশিক জমি রয়েছে এমনটাই দাবী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন জমির মালিক দাবীদার জৈনক জহির উদ্দিন চৌধুরী। কিন্তু এলাকাবাসী বলছেন ওই ভবণের জায়গায় জহির উদ্দিনের কোন স্বত্ব নেই।লোভের বশবর্তী হয়ে জহির উদ্দিন চৌধুরী এমন অন্যায় দাবী করেছেন। এমনকি নির্মাণ কাজ তদারকি করার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ও প্রানণাশের হুমকি দিয়েছেন জমির মালিক দাবীদার জহির উদ্দিন এমন অভিযোগ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আমিনুল এহেছান মানিক।
তিনি আরো আশংকা করছেন যে, জহির উদ্দিন চৌধুরীর হাতে তিনি যে কোন সময় হামলার শিকার হতে পারেন। প্রধান শিক্ষক আরো জানান যে বিদ্যালয়ের নামে ৬ একর জমি থাকা সত্বেও বর্তমানে চতুর্দিকের দখলদারিত্বের কারণে উক্ত পরিমাণ জমি বিদ্যালয়ের আওতায় নেই।অপর দিকে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার কারণে কয়েক লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন নজরুল কনষ্ট্রাকশনের মালিক ও ঠিকাদার করিম উল্লাহ বাদশা।
এ বিষয়ে জানতে রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী জানান, স্কুলের ভবন নির্মান নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। আর এ বিরোধ নিরসনে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমোঝোতা বৈঠক আয়োজন করার কথা জানান। এতে উভয় পক্ষের কাগজ পত্র যাচাই করে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে। কাগজে যদি জহির উদ্দিন চৌধুরীর জমি থাকলে তা উপযুক্ত দামে স্কুল কতৃপক্ষকে কিনে নিতে হবে আর যদি তার জমি না থাকে তাহলে তিনি নিজ দায়িত্বে তার দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহার করে নিবেন। এদিকে ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রাখতে ২৪ ফেব্রুয়ারী ককসবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত কতৃক স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভুমি (উখিয়া) আমিমুল এহসান খাঁন। আর এ নির্দেশের ফলে এলাকাবাসী মনে করছেন প্রাথমিক ভাবে ভুমিদুস্যতার পরাজয় হয়েছে এবং স্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী কে তা চিহ্নিত হয়েছে। এটাকে সাধারন মানুষের বিজয় বলে উল্লাস করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য যে, নির্মাণাধীন ভবনটি ব্যবহার উপযোগী হলে নিরসন হবে বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণীকক্ষ সংকট। তাই সকল দ্বন্দ্ব নিরসনে জহির উদ্দিন চৌধুরীকে পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরন বন্ধের আহবান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
পাঠকের মতামত: