কাশফুলের ঋতু শরৎ এসেছে আজ প্রায় ২৫ দিন। ভাদ্র-আশ্বিন মিশেলে গড়া এই ঋতুতে প্রকৃতির ভিন্ন রূপ দেখা যায়। মেঘের ভেলার নিচে গরম-ঠান্ডা পরিবেশের খেলা। কখনও প্রচণ্ড রোদে ঘেমে অস্থির, আবার কখনও এক পশলা বৃষ্টিতে স্বস্তি। প্রকৃতির এই ভিন্নতা তথা ঋতু পরিবর্তনের বাতাস গায়ে লাগলেই জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতে হয়। যার ভুক্তভোগী বেশির ভাগই শিশু।
ডেঙ্গু, করোনার মৌসুমও চলছে পাল্লা দিয়ে। তাই যেকোনো অসুস্থতা থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সতর্কতার বিকল্প নেই। কেননা, এ সময় শিশুর বিশেষ যত্নই শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে সাধারণ ফ্লু থেকে শুরু করে যেকোনো মহামারির।
শরতে শিশুর যত্নে করণীয়
শিশুরা ঘরে আবদ্ধ থকতে পছন্দ করে না। স্কুলে তো যেতেই হয়, এ ছাড়াও খেলতে যাওয়া, ঘুরতে যাওয়ার বায়নাও চলমান। তাই শিশু বাইরে যাওয়ার সময় হালকা রঙের সুতি কাপড় পরাতে হবে। সঙ্গে রুমাল দিতে হবে যেন ঘামলে মুছে ফেলা যায়। আচমকা বৃষ্টি থেকে রেহাই পেতে ছাতা বা রেইনকোটও সঙ্গে রাখতে হবে।
শরৎকালে এলার্জি জনিত সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। বাইরের প্রচণ্ড ধুলাবালি, রেণু-কণার মাধ্যমে শিশু যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই ঘর-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। ব্যবহার্য জিনিস ব্যবহারের পর ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। বাইরে গেলে শিশুকে মাস্ক পরায় অভ্যস্ত করতে হবে। শিশুর কোনো খাবার বা পরিবেশে এলার্জি আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
শিশুর গোসলের সময়সূচী ঠিক রাখতে হবে । প্রতিদিন একই সময়ে গোসল করলে ভালো এবং অবশ্যই তা সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টার মধ্যে। গোসলের সময় শরীরে যেন ঘাম না থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিবেশ একটু ঠাণ্ডা হলেই গোসল বাদ দেয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।
রাতে শোবার সময় আরামদায়ক পোশাক ব্যবহার করতে হবে। সুতি, মিশ্র সুতি কিংবা লিলেন কাপড়ের হালকা রং এর ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে যেন ঘাম কম হয় আবার ঠাণ্ডাও না লাগে। ভোরের দিকে ঠাণ্ডা অনুভূত হলে কাঁথা ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে। রাতে ঘুম ভাঙলে পরোখ করতে হবে শিশু ঘেমে গেছে কিনা অথবা শীত লাগছে কিনা।
শিশুর খাদ্যতালিকায় সুষম খাবার রাখতে হবে। ডিম, দুধ, শাক-সবজি, ফলমূল ও মাছ-মাংস সবই নিয়ম করে খাওয়াতে হবে। কোনো খাবার খেতে না চাইলে বিকল্প পদ্ধতিতে রান্না করে খাওয়াতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হবে। খেলাধুলা বা পরিশ্রমের পর ফলের রস খাওয়াতে পারেন।
এভাবে শরৎ ঋতুতে শিশুর যত্ন নিলে আশা করা যায় শিশু রোগ বালাই থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু তারপরও সর্দি-কাশি বা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গেলে প্রথমে ঘরোয়া উপায়ে নিরাময় করার চেষ্টা করতে হবে।
জ্বর হলে শিশুকে ঘরে রাখুন। গোসল না করালে গা মুছে দিন। তখন শিশুকে সহজপাচ্য এবং যে খাবার খেতে শিশু স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে সে খাবার খেতে দিন। সর্দি-কাশি হলে ঘরে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে বানানো বিভিন্ন পানীয় খাওয়াতে পারেন। ৪ দিনের বেশি জ্বর এবং ৭ দিনের বেশি সর্দি-কাশি হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
পাঠকের মতামত: