কক্সবাজার, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

যারা মাতৃভাষা ছেড়ে শিশুদের ইংরেজি শেখান, তারা মানসিক দীনতায় ভোগেন: প্রধানমন্ত্রী

সবাইকে সঠিক উচ্চারণে বাংলাচর্চার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাঙালি হয়েও যারা বিদেশি উচ্চারণে বাংলা বলেন তাদের জন্য করুণা হয়। যারা মাতৃভাষা ছেড়ে শিশুদের ইংরেজি শেখান, তারা মানসিক দীনতায় ভোগেন।’ শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষার মাধ্যমে বারবার বাঙালির অস্তিত্বের ওপর আঘাত হেনেছে পাকিস্তানি শাসকরা। শুধু ভাষা নয়, আমাদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, জাতিসত্তার ওপর আঘাত করা হয়েছে। তাই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বায়নের যুগে অন্য ভাষা শেখারও গুরুত্ব রয়েছে। তবে, অবশ্যই মাতৃভাষাকে বাদ দিয়ে নয়। যোগাযোগ করতে হলে, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য সম্পর্কে জানতে সেখানে অন্য ভাষা শেখারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু মাতৃভাষা বাদ দিয়ে নয়। বাংলাদেশের মাটিতে থেকে যারা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে না, তাদের প্রতি করুণা ছাড়া আর কিছু নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাতৃভাষার অপমান সহ্য করা যায় না। আমাদের দুর্ভাগ্য হলো, বারবার আমাদের ওপর আঘাত এসেছে। এই আঘাতটা শুধু ভাষার ওপর নয়, আমরা যে বাঙালি জাতি, আমাদের জাতিসত্তার ওপর আঘাত। আমাদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ভাষার ওপর আঘাত এসেছে। মূলত আমাদের অস্তিত্বের ওপরেই আঘাত এসেছিল। সেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই আমাদের যে অগ্রযাত্রা, সেখান থেকেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পাওয়ায় বাংলা ভাষার প্রতি দেশের জনগণের দায়িত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভাষা নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি ভাষা শিক্ষার জন্য ট্রাস্ট গঠনেরও পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা ভাষা শিখবে, তারা বিভিন্ন ফেলোশিপ পাবে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাতৃভাষায় লেখাপড়া করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নবনির্মিত ম্যুরাল উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। পরে ইনস্টিটিউটে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির অফিস পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পাঠকের মতামত: