কক্সবাজার, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

মাজেদের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে স্বজনরা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই তার সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে গেছেন স্বজনরা।

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কারা কর্তৃপক্ষের ডাকে তারা কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কারা সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে জল্লাদের একটি দল। যেকোনো সময় কার্যকর হতে পারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড। শনিবার অথবা রোববার ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনা বেশি বলেও জানায় সূত্রটি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বরখাস্ত হওয়া ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদ ২৫ বছর ধরে কলকাতায় আত্মগোপনে ছিলেন। গত ১৬ মার্চ তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর সোমবার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মিরপুর সাড়ে ১১ থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ৮ এপ্রিল মৃত্যুর পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর সব দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান আবদুল মাজেদ। তবে প্রাণভিক্ষার আবেদনটি নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফলে এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে সামরিক বাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য। খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দিতে জারি করা হয় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে খুনিদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার পথ উন্মুক্ত করে। বিচার শেষে ১২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয় দফায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১২ জন আসামির মধ্যে পাঁচজনের দণ্ড কার্যকর করা হয়।

অন্য ছয় খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়ায়। তারা হলেন— লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান।

গ্রেফতার ও প্রত্যার্পণ ঠেকাতে আসামিরা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, পাকিস্তান, লিবিয়া ও আফ্রিকাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বারবার অবস্থান বদল করছেন। পরে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় পলাতক থাকা সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশও জারি করা হয়।

পাঠকের মতামত: