কক্সবাজার, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ চায় চাষিরা

রাজাবাড়ীতে নতুন হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে সপ্তাহ খানেক আগ থেকে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের বাজার দর নেমে গেছে প্রায় অর্ধেকে। এ বছর পেঁয়াজের বাজার দর আকাশচুম্বী হওয়ায় কৃষকেরা পেঁয়াজের আবাদ বেশি করেছেন। আবাদে তাদের সব ধরনের খরচ বেশি হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে তাদের গতবারের তুলনায় খরচ হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

বেশি লাভের আশায় তারা পেঁয়াজ চাষ শুরু করে। কিন্তু পেঁয়াজের বাজার দর নামতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ তারা বাজারে বিক্রি করছের মান ভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকা থেকে ১৭শ টাকায়। পুরোদমে মৌসুম শুরু হলে পেঁয়াজের বাজার দর কমে যাবে। আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় কৃষকেরা বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির না করার অনুরোধ জানান সরকারের প্রতি।

পেঁয়াজের বাজার দর বেশির কারণে রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার মধ্যে রাজবাড়ী সদর, বালিয়াকান্দি, গোয়ালন্দ, কালুখালী ও পাংশায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে প্রায় ২ হাজার হেক্টরেরও বেশি পেঁয়াজ আবাদ করেছেন কৃষকেরা।

পেঁয়াজ চাষে বীজ, কীটনাশক, চাষ ও মজুরি সব ক্ষেত্রেই এ বছর তাদের খরচ হয়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। বিশেষ করে বীজ কিনতে হয়েছে গত বছরের চাইতে কয়েকগুণ দামে। খরচ বেশি হওয়াতে তাদের লাভ কমবে। তবে বর্তমান বাজার দর থাকলে তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানান।

সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের কোলা ফসলি মাঠের পেঁয়াজ চাষি শামসুল হক তালুতদার, ইউসুফ তালুকদার, পরশ কুমার ও শুভ গাজী বলেন, দুই থেকে আড়াই মাস আগে প্রথম দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আনলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দর পেয়েছেন প্রায় দেরশ টাকা থেকে ২শ টাকার মতো।

মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ভালো থাকলেও বর্তমানে হালি পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করায় কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে নেমে এসেছে ২৫ টাকা থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তইে এই দাম পেলেও তারা মোটামুটি ভালো লাভবান হতে পারবেন বলে জানান।

কিন্তু পুরোদমে মৌসুম শুরু হলে প্রতি কেজি পেয়াজ ২০ টাকার নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তারা। আর এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কলে জানান তারা। তবে এখন থেকে তিন চার মাস বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ না হলে পেঁয়াজ চাষে খরচের টাকাই ওঠাতে হিমশিম খেতে হবে কৃষকদের।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃষ্ণ দাস বলেন, এ বছর রাজবাড়ীতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার হেক্টরের বেশি। আর আবাদ হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে। এর মধ্যে হালি পেঁয়াজের আবাদই হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

তিনি জানান, সাধারণত বাজার দর বেশির কারণে পেঁয়াজের আবাদ বেশি করেছেন চাষিরা। আর পেঁয়াজ পরিপূর্ণভাবে পরিপক্ক না হলে, না তোলার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে প্রথম দিকে চাষিরা পেঁয়াজের দাম ভালো পেয়েছে। আবাদের পরিমান বৃদ্ধির কারণে উৎপাদনও বেড়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি পেয়াজ বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টার মধ্যে। এভাবে পেঁয়াজের বাজার দর থেকে গেলে তারা ভালো লাভবান হতে পারবেন। তবে ভর মৌসুমে পেঁয়াজের আমদানি বেশি হলে তখন বাজার দর কিছুটা কমে যেতে পারে বলে ধারনা তার। তবে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ত্রিশ টাকার কম হলে চাষিরা তেমন লাভবান হতে পারবেন না বলে মনে করেন তিনি।

পাঠকের মতামত: