দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস বন্ধ থাকার পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে সুন্দরবন। ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকেরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন। এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ট্যুর অপারেটররা। নিজেদের ভ্রমণতরিগুলো সংস্কার করে সাজিয়ে নিচ্ছে তারা। কোভিড সংক্রমণের মধ্যেও পর্যটকদের কাছ থেকে অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ট্যুর অপারেটররা।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে সেই অনুমতি পাওয়া গেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের নিয়ম অনুযায়ী ভ্রমণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে ট্যুর অপারেটররা। তিনি বলেন, সাধারণত একটি বড় জাহাজে সর্বোচ্চ ৭৫ জনকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অপারেটররা প্রয়োজনে কম পর্যটক নেবে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ১৯ মার্চ পুরো সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে বন বিভাগ। মূলত অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সুন্দরবনে ভ্রমণ কার্যক্রম পরিচালনা করে ট্যুর অপারেটরগুলো। তবে বিশেষ উৎসব বা ছুটিগুলোতেও বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়ে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণ করায় অপারেটররা।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও খুলনার বন ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন। বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাতেও মানববন্ধন করা হয়। তবে বন বিভাগ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল সুন্দরবনসহ বন বিভাগের সব পর্যটনকেন্দ্রের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে অক্টোবর পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে।
খুলনা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য প্রায় ৭০টির মতো ট্যুর অপারেটর রয়েছে। এসব অপারেটরের ভ্রমণতরি বা লঞ্চগুলো থাকে খুলনা নগরের জেলখানা ঘাটের অপর পাড়ে। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভ্রমণতরি বা লঞ্চগুলো ধুয়েমুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। কোনো কোনোটিতে করা হচ্ছে রং। আবার নতুন তৈরি করা জাহাজকে একটু আকর্ষণীয় করতে সাজানো হচ্ছে নতুনভাবে।
এ বছর হলিডে শিপিং লাইন ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান একটি নতুন ভ্রমণতরি তৈরি করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুল ফয়সাল মো. সায়েম বলেন, জাহাজটি নতুন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সুন্দরবনে ভ্রমণ বন্ধ থাকায় তা এত দিন উদ্বোধন করা হয়নি। ১ নভেম্বর থেকে সুন্দরবনে পর্যটক ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে শুনে শেষ মুহূর্তের কাজ করা হচ্ছে। আগামী ২ নভেম্বর জাহাজটি উদ্বোধন করা হবে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, প্রায় আট মাস বন্ধ থাকায় ভ্রমণ জাহাজগুলো যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ট্যুর অপারেটররাও। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অপারেটরদের বেশ সময় লাগবে। ১ নভেম্বর থেকে অনুমতি পাওয়া যাবে শুনে ইতিমধ্যে অপারেটররা নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে, ভ্রমণের জন্য তারা বিভিন্ন প্যাকেজও ঘোষণা করছে। অন্যদিকে কোভিড সংক্রমণের মধ্যেও পর্যটকদের কাছ থেকে অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
পাঠকের মতামত: