কক্সবাজার, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কক্সবাজারে ৭ শতাধিক ট্রলার ঘাটে

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাগরে বন্ধ হয়ে গেছে মাছ ধরা। সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ঝড়ো হাওয়ার আশংকায় সমুদ্র বন্দর সমূহে ৩ নং সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া দপ্তর। গতকাল শুক্রবারও এ সংকেত অব্যাহত ছিল। ফলে কক্সবাজারের ট্রলারগুলো সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখে ঘাটে ফিরে আসে। বর্তমানে কক্সবাজারের ট্রলারগুলো নদী মোহনায় নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, কক্সবাজারে ছোট বড় ৭ সহস্রাধিক যান্ত্রিক বোট রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা সংকেত জারি করায় ট্রলারগুলো সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখে ঘাটে ফিরে আসে। ট্রলারগুলো কস্তুরাঘাট, ফিশারীঘাট ও নাজিরারটেক মোহনাসহ বিভিন্ন আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।

বর্তমানে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে আজ শনিবার আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে ট্রলারগুলো পুনরায় সাগরে মাছ ধরতে রওনা দেবে বলে জানান জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

ট্রলার মালিকরা জানান, সাগরে মাছ ধরা বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো ৮/১০ দিনের রসদ নিয়ে এবং তাইল্যা জালের বোটগুলো এক সপ্তাহের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। আবার ৭/৮ আঙুলের ফাঁসযুক্ত ফইল্যা জালের বোটগুলো সাগরে মাছ ধরতে যায় ৫/৬ দিনের রসদ নিয়ে। এই বোটগুলো রূপচাঁদা জাতীয় মাছ ধরে।

বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। এরমধ্যে ইলিশ ধরা হয় ৪ থেকে ৫ আঙুলের ফাঁসযুক্ত সুতার জাল দিয়ে, যেটি ভাসা জাল নামেই জেলেদের কাছে পরিচিত। আর সাগর থেকে তাইল্যা ও কোরাল মাছ ধরা হয় ২ থেকে ৩ আঙুলের ফাঁসযুক্ত এক ধরনের রক জাল দিয়ে, যেটি তাইল্যা জাল নামেই পরিচিত। এছাড়া চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জালের বোটগুলো একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে যায় এবং মাছ ধরে দিনে দিনেই ফিরে আসে। এই ধরনের জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় পাঁচকাড়া (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। এই ধরনের বোটগুলোতে একেক মৌসুমে একেক প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গত ২ দিন ধরে সকল ধরনের নৌ–যানই সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে। ফলে গতকাল শুক্রবার কক্সবাজার শহর থেকে কোন ধরনের সামুদ্রিক মাছ বাইরে যায়নি বলে জানান কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।

পাঠকের মতামত: