কক্সবাজার, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

টেকনাফ-উখিয়ায় যেতে স্থানীয় তরুণদের অনীহা

চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার তরুণরা নিজ এলাকায় যেতে ভয় পাচ্ছেন। সেখানে গেলেই তাদেরকে যখন-তখন অপহরণের শিকার হতে হচ্ছে। এরপর মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে ফিরতে হচ্ছে। এসব কারণে তারা টেকনাফে যাওয়া-আসা বন্ধ রেখেছেন।

পরিবার থেকেও তাদের বাড়ি ফিরতে বারণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের ব্যর্থতায় একের পর এক এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত টেকনাফ-উখিয়ার শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি দ্রুত সেখানে যৌথ বাহিনীর বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হোক। অন্যথায় সেখানে বসবাসকারীদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হবে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের জামালখানে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা এসব অভিযোগ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব টেকনাফের সভাপতি মোহাম্মদ রাসেল, টেকনাফের শিক্ষার্থী কুতুব উদ্দিন, অপহরণের পর খুনের শিকার পরিবারের সদস্য হারুণ উর রশিদ, অ্যাডভোকেট আতিকুল্লাহ, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদুল আলম, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সিয়াম ইলাহী।

মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘টেকনাফে রীতিমতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সেখানকার স্থানীয়দের অপহরণ করা হচ্ছে। মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনতে হচ্ছে। তারা এতটাই নির্যাতন করছে যে অপহরণের শিকার ব্যক্তিরা মুক্তি পেলে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচছেন। তারা এক প্রকারর জীবন ভিক্ষা নিয়ে ফিরছে। অনেকেই খুন হচ্ছেন। সচ্ছল পরিবারগুলোকে টার্গেট করে এসব করা হচ্ছে। এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক কিছু ব্যক্তি ও রোহিঙ্গারা জড়িত।

তিনি বলেন, ‘সোমবার একজন ৬৫ বছরের বাসিন্দা অপহরণের শিকার হয়েছেন। নাগরিকদের ন্যূনতম নিরাপত্তা নেই। দ্রুত টাকার মালিক হতে রোহিঙ্গারা মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আমরা শঙ্কিত। সেখানে আমরা যেতে পারছি না। পড়াশোনা করছি চট্টগ্রামে। কিন্তু ছুটিতে বাড়িতে যেতে পারছি না।’

হারুণ উর রশিদ নামে একজন বলেন, ২০২০ সালের মে মাসে আমার ভাইকে একটি চক্র অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই সময় আমাদের এক প্রতিবেশী ও পাশের এক রোহিঙ্গাও অপহরণের শিকার হন। মূলত ওই রোহিঙ্গাই অপহরণ করেন। এরপর আরেক প্রতিবেশীর লাশ পাওয়া গেল। লাশ পাওয়ার দিন আমাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হলো আমার ভাইকে মেরে ফেলা হবে। আমাদের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু প্রশাসনের অভিযানের কারণে আমরা আমাদের ভাইকে উদ্ধার করতে পারিনি। ঈদুল ফিতরের একদিন আগে আমাদের ঘরে আমার ভাই ফিরলেন, কিন্তু লাশ হয়ে।’

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, টেকনাফকে অবিলম্বে নিরাপদ করতে হবে। অন্যথায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী চোখে গামছা বেঁধে খেলনা পিস্তল ধরে এবং হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে প্রতীকী অপহরণ চিত্র তুলে ধরেন।

পাঠকের মতামত: