কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ছয় এনজিওর বিরুদ্ধে বন বিভাগের নোটিশ

পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করে সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে নির্মিত স্থাপনায় কার্যক্রম পরিচালনা করার অপরাধে ছয় এনজিও’কে নোটিশ দিয়েছে বনবিভাগ।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের সংরক্ষিত বনভূমিতে রোহিঙ্গাদের পুঁজি করে, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করে সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে নির্মিত স্থাপনায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দেশি-বিদেশি কয়েকটি এনজিও। যাহা বন আইন ১৯২৭ (যা ২০০০ সালে সংশোধিত) এর ২৬ (১ক) ধারা মতে, শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উখিয়া সদর বিটের ওয়ালাপালং, মৌজার আর.এস দাগ নং- ৮৬৪৬, ৮৯০১, ৮৯০১, ৮৬৪০, ১৭০, ৮৬৪০, মধুরছড়া, মুহুরীপাড়া (আমগাছ তলা), কুতুপালং (বটগাছ তলা), টি এন্ড টি ও (রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশন সংলগ্ন) এলাকায় সরকারি সংরক্ষিত বনভূমিতে সম্পূর্ণ বে-আইনীভাবে নির্মিত স্থাপনায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ডাব্লিউএফপি, আইওএম ও ইউএনসিআর সহ দেশীয় এনজিও ব্রাক, জনসেবা কেন্দ্র ও মাইশা এন্টারপ্রাইজ।

সূত্র আরও জানায়, গত ২৯ (সেপ্টেম্বর) ২০২৪ তারিখে এসব অবৈধ দখলকৃত দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বরাবর উখিয়া সদর বিট কর্মকর্তা ইমদাদুল হাসানের স্বাক্ষরে নোটিশ প্রদান করা হয়। উক্ত নোটিশে বলা হয়েছে অভিযুক্ত এনজিও গুলোকে ৬ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য। অন্যথায় এসব এনজিওর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ  করা হয়েছে। উখিয়া সদর বিট কর্মকর্তা ইমদাদুল হাসান বলেন, ৬ কর্মদিবসের মধ্যে ব্রাক এবং মাইশা এন্টারপ্রাইজ জবাব দিয়েছে কিন্তু এই জবাবের কোন ভিত্তি নেই।

এ কে এম আজাদ নামের একজন বলেন, সরকারী বনভূমি অবৈধ দখলকৃত ৬ এনজিও-র বিরুদ্ধে বনবিভাগের পক্ষ থেকে যে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে এইগুলা জনগণকে আই-ওয়াশ করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

উখিয়া প্রেস ক্লাবের আহবায়ক সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, সংরক্ষিত সরকারি বনভূমির জায়গা দিনদিন মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ। কাজেই দ্রুত সরকারি বনভূমির জায়গা উদ্ধার করার জন্য আমি বনবিভাগের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার কক্সবাজার জেলার সাধারণ করিম উল্লাহ কলিম বলেন, বনবিভাগকে ধন্যবাদ, বনবিভাগের জায়গায় এনজিও-র অফিস করায় নোটিশ করার জন্য। আশাকরি দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালাবে। বনবিভাগ তাদের জমি ফিরিয়ে নিবে এবং ভবিষ্যতে যাতে করে কেউ আর বনের জমি দখল করতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকবে।

উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের  সময়ে দেশী-বিদেশী এনজিও রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করতে গিয়ে কিভাবে অফিস করেছে আমার জানা নেই।  তবে রিসেন্ট তাদেরকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। ধাপে ধাপে আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্য  দিয়েই আমরা এগিয়ে যাবো।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হোসেন জানান, আসলে বিষয়টা সম্পর্কে আমি অবগত নয়। যদি বনবিভাগ ৬ এনজিওর বিরুদ্ধে নোটিশ প্রদান করে, তা হলে যাচাই-বাছাই করে সেসব এনজিওর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: