কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

কোটায় ভর্তি হয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব, বাতিল হতে পারে ছাত্রত্ব

চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগের নেতা খান তালাত মাহমুদ রাফি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ছাত্র। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও ২০২২-২৩ সেশনে তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন কোটা সুবিধা নিয়ে। রাফির মতো এমন কোটা সুবিধা ভোগ করেও বোল বদলে এই সুবিধার বিপক্ষে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

কোটাবিরোধী আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা খান তালাত মাহমুদ রাফি নিজেও মুক্তিযোদ্ধার নাতি। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। সূত্র বলছে, কোটার বদৌলতে যারা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে যারা কোটা বাতিলের আন্দোলনে জড়িত তাদের ওই সকল প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রত্ব বাতিল হতে পারে।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে গত রোববার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা। প্রথম দুই দিন রবি ও সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের পর বুধবার আবার সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। তাদের এ কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে রাজধানী অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অবরোধে সড়কে যানবাহন আটকে থাকায় দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাজধানীবাসীকে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শাহবাগে বারডেম হাসপাতালের সামনে কোটা আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে একদল শিক্ষার্থীর হামলার শিকার হন সময় টেলিভিশনের একজন রিপোর্টার ও ক্যামেরাপারসন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংবাদ সংগ্রহকালে সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক ত্বোহা খান তামিম ও চিত্র সাংবাদিক প্রিন্স আরেফিনকে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে ধাওয়া করে একদল শিক্ষার্থী; ভাঙচুর করা হয় আরেফিনের হাতে থাকা ভিডিও ক্যামেরা।

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বাঁধা ও কালো রঙের জার্সি পরা এক যুবক সাংবাদিক তামিমের ওপর হামলা করেন। আরেকজনের হাত থেকে হেলমেট নিয়ে তামিমকে মারতে তেড়ে আসেন ওই যুবক।

অন্যদিকে বুধবার (১০ জুলাই ) দুপুরে টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে বহিরাগতের অনুপ্রবেশ ঘটে বলে স্বীকার করেন আন্দোলনকারীরা। এমন নানা বিতর্কের মধ্যে এই আন্দোলনে কোটা সুবিধা নেওয়া অনেককেও দেখা যাচ্ছে বলে উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে, কোটা সুবিধা নিয়েও এই আন্দোলনে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার পর তাদের কোটা সুবিধা ফের পর্যালোচনা করা হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তাদের কোটা বাতিলে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই উদ্যোগে তারা কোটা সুবিধা হারানোসহ তাদের প্রাপ্ত সুবিধাও বাতিল হতে পারে।

পাঠকের মতামত: