কাইছার সিকদার::
কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের হাটখোলা পাড়া নামক স্থানে সুদের টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বজল করিম (৪৫) নামে এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন এবং ১ মহিলা সহ ২জন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়৷ আহতদের মধ্যে ১জন নিহত বজল করিমের স্ত্রী রহিমা বেগম(৩৫) ও অন্য জন নিহতের বড় ভাই ফজল করিম (৫০) বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়৷
আজ ০৪/০৫/২০২০ইং সোমবার আনুমানিক সকাল ৭.৩০ ঘটিকা নাগাদ মর্মান্তিক এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়৷
এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশি অভিযানে ৪জন আটক হন৷ আটক কৃত রা হলেন শাহাব উদ্দিন(৩৯) আলা উদ্দিন (২৫) ও ফয়েজ (২৫) ও পুতিলা বেগম (৩৭) বছর৷ ৪জন কে প্রাথমিক ভাবে খুনের সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করেন কুতুবদিয়া থানা পুলিশ৷ অভিযুক্ত পুরুষ ৩জন সবাই নিহত ফজল করিমের চাচাত ভাই ও পুতিলা বেগম চাচাত ভাইয়ের বৌ অভিযুক্ত শাহাব উদ্দিন এর স্ত্রী৷
পুলিশি অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুতুবদিয়া থানার এস আই সন্জয়(নীরস্ত্র), তাঁর সাথে কথা বলে জানা যায় আজ আনুমানিক সকাল ৮.৩০ ঘটিকা নাগাদ নিহতের এক স্বজন কুতুবদিয়া থানায় এসে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন এবং সংঘর্ষের ঘটনার বিবরণ দেন, অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিদারুল ফেরদৌসের নির্দেশে এস আই সন্জয় এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফৌজ সিপাহী সাইফুল, ব্যাটেলিয়ন আছাল উদ্দিন, রুহুল আমিন সহ ৪জনের একটি দল দ্রুত ঘটনা স্থলে ও কুতুবদিয়া হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন, অভিযানে তারা হাসপাল থেকে ৩জন ও ঘটনা স্থল থেকে ১জন সহ মোট ৪জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন বলে প্রতিবেদক কে জানান৷ প্রতিবেদক কাইছার সিকদার পুলিশি অভিযানে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে ঘটনা অবলোকন করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হন৷
নিহত ফজল করিমের ছেলের বৌ-হনুফা আক্তার (২৪) ঘটনার বিবরণে বলেন আজ ৪মে সোমবার আনুমানিক সকাল সাড়ে সাত টার সময় অভিযুক্ত শাহাব উদ্দিন তাহার শশুর নিহত বজল করিমের কাছে সুদের টাকার লভ্যাংশ বাবদ ৫০০টাকা চাইতে আসেন, নিহত ফজল করিম (৪৫) পারিপার্শ্বিক আবস্থার কথা উল্লেখ করে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন৷ তাতে শাহাব উদ্দিন রাগান্বিত হয়ে উদ্যত আচরণ করেন এবং টাকার জন্য জোর পূর্বক চাপ দিতে থাকেন, ফলে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়৷ এক পর্যায়ে শাহাব উদ্দিনের ছোট ভাই আলা উদ্দিন(২৫) ও ফয়েজ(২৫) এসে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র সহ ঘটনায় যোগ দেন, শাহাব উদ্দিনের স্ত্রী পুতিলা বেগম (৩৭) এসে উচ্চ স্বরে গালিগালাজ করে নিহত বজল কে মারার জন্য এমন কি হত্যা করার কথা বলতে বলতে ঘটনায় যোগ দেন স্ত্রীর উৎসাহে শাহাব উদ্দিন সহ অন্য অভিযুক্তরা সবাই হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিহত বজল করিমের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং এলোপাতাড়ি মারতে থাকে এক পর্যায়ে বজল করিম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন৷
বজল করিম(৪৫) কে দ্রুত কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কম্প্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্য রত ডাক্তার মৃত বলে ঘোষনা দেন৷ নিহত বজল করিম কে বাঁচাতে তার স্ত্রী রহিমা বেগম (৩৫) ও ফজল করিম (৫০) এগিয়ে আসলে অভিযুক্ত দের লাঠির আঘাতে তারা ও আহত হন, আহতদের মধ্যে রহিমা বেগম (৩৫) এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন কুতুবদিয়া হাসপাতালের কর্তব্য রত চিকিতৎসক ৷
কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব-দিদারুল ফেরদৌস জানান ঘটনার ব্যাপারে তিনি অবগত হয়েছেন এবং সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়ে অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দেন, অভিযানে ৪জন কে আটক করেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন৷ ওসি দিদারুল ফেরদৌস নিজে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন- বলেন নিহত বজল করিম কে আনুমানিক ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন অভিযুক্ত শাহাব উদ্দিন যার সুদ বাবদ প্রতি মাসে ৫০০টাকা ধার্য করা হয়, প্রতি মাসের ন্যায় আজকে ও সুদের নির্ধারিত ৫০০টাকা চাইতে গিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়, সংঘর্ষে উভয় পক্ষে হতাহত হয় এবং বজল করিম গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন, লাশের সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন৷ তিনি আরো বলেন অভিযোগ পাওয়া মাত্র আমরা দায়িত্বে সামান্য মাত্র হের ফের করি নি দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছি বলে সল্প সময়ে বেশীর ভাগ আসামি আটক করতে সক্ষম হয়েছি, তিনি আরো বলেন কুতুবদিয়ায় সকল অপরাধ এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে আমার প্রতিক্রিয়া সবসময় আপোষহীন, নিজ দায়িত্বে আমি সবসময় অবিচল৷ এখন পর্যন্ত মামলার জন্য প্রস্তুতি চলছে, বাকী প্রকৃয়া সম্পন্ন হলে অন্য আসামী দের ও দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন ওসি দিদারুল৷
পাঠকের মতামত: