কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উখিয়ায় সড়ক নির্মাণে বালির পরিবর্তে পাহাড়ি মাটি!

জসিম আজাদ, উখিয়া::
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পূর্ব মরিচ্যা মধু ঘোনা রাস্তার নির্মাণকাজে বালির পরিবর্তে পাহাড়ের লালমাটি ও নিম্নমানের পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উধাওয়া কনস্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে। নির্মিত সড়কে এমন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তা উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার বছর বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। হলদিয়ার মধু ঘোনা এলাকার এ রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তা ভেঙে যাবে- এমন ধারণা করছেন তারা। কয়েক মাস যেতে না-যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে বর্তমান নির্মাণ করা এই সড়কটি। যার ফলে সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের দুর্ভোগের শিকার হতে হবে এলাকাবাসীর। স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন বলেন, মধু ঘোনার এই সড়ক নির্মাণকাজে বালির পরিবর্তে পাহাড় কেটে দেয়া হচ্ছে লাল মাটি। আমরা অভিযোগ করার পরেও একই সামগ্রী দিয়ে কাজ চলমান রেখেছে। এভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি করে বানানো রাস্তাটি টেকসই হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

রাস্তার কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উধাওয়া কনস্ট্রাকশনের মালিক বজলু কোম্পানি বলেন, রাস্তার কাজে বালির পরিবর্তে পাহাড়ি মাটি দেয়ার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না বিস্তারিত ম্যানেজার জানাবে বলে ফোন কেটে দেন। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা নির্মাণে যত বালি দরকার তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারের সঙ্গে চুক্তিতে স্থানীয় আবদুল হকের পুত্র আতিকুর রহমান ও মো. ফারুক, আমির হোসেনসহ কয়েকজনের বালি ও পাহাড়ের মাটিখেকো সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে ডাম্পারে প্রতি গাড়ি ১২-১৪শ টাকায় বিক্রি করছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

একই এলাকার ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, রাস্তা নির্মাণকাজে এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। পাহাড় কাটা একটি বেআইনি কাজ। কিন্তু তা কেউ মানছে না। পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের পাহাড় কেটে রাস্তায় মাটি পাচারের বিষয়ে রামু ধোঁয়া পালং রেঞ্জ কর্মকর্তা তোসাদ্দেক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি আগে অবগত ছিলাম না, খোঁজখবর নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান খানের কাছে রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় নির্মাণকাজে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। যদি কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে থাকে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: