ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাবোঝাই ভাঙা নৌকা উদ্ধারের ঘটনা বিশ্বের জন্য সতর্কবার্তা বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গা সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন (বিআরওইউকে)।
সংগঠনটি বলেছে, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের মানুষ সাগর থেকে কয়েকশ অভুক্ত ও মৃতপ্রায় রোহিঙ্গা উদ্ধার করেছে। মিয়ানমারের নজিরবিহীন নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইন্দোনেশিয়াকে অনুসরণ করা।
চলতি সপ্তাহে পরপর রোহিঙ্গাবাহী দুটি বিকল নৌকা ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে ভেড়ে। দুটি নৌকাই প্রায় এক মাস ধরে সাগরে ভাসছিল। সবশেষ নৌকায় ১৮০ জনের বেশি রোহিঙ্গা অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যু হয়। আগেরটায় ছিল ৫৭ জন।
২০১৭ সালে রাখাইনে সামরিক অভিযান চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া প্রতিবছরই অনেক রোহিঙ্গা ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যায়। গত দুই মাসে এসব গন্তব্যের উদ্দেশে এমন পাঁচটি নৌকা যাত্রা করেছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশনের (বিআরওইউকে) এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের মানুষ আরও একবার দেখিয়ে দিয়েছেন, মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সহানুভূতি কেমন হওয়া উচিত।’
‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আমরা আচেহবাসীর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ, তারা তাদের জীবনবাজি রেখে সাগরে ডুবন্ত অবস্থায় আমাদের ভাইবোনদের জীবন বাঁচিয়েছেন।’
বিআরওইউকের প্রেসিডেন্ট তুন খিন বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার জনগণ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, দক্ষিণ এশিয়া ও এর বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারকে তা অনুসরণ করা উচিত। তাদের উচিত রোহিঙ্গাদের দুর্দশা ঘোচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। কারণ, এরা সেসব লোক যারা মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার হতে হতেও বেঁচে গেছে। আর এখন তারা একটু মর্যাদা ও নিরাপত্তার খোঁজে ভাঙা নৌকায় চড়ে বসতেও পিছপা হচ্ছে না।’
পাঠকের মতামত: