কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

ইউটিউব দেখে স্বল্প খরচে তরমুজ চাষে সফল উখিয়ার জসিম

নিজস্ব প্রতিবেদক::

কক্সবাজার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বাড়িতে বেকার বসে ছিলেন জসিম উদ্দিন শামিম৷ হঠাৎ মাথায় আসে, বেকার বসে না থেকে সামনে গরম ও রমজান উপলক্ষে নিজের এক কানি বা ১০ শতক জমিতে ইউটিউব দেখে শুরু করেন তরমুজ চাষ৷ সেখানে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে দুই লাখ টাকা লাভের আশা তাঁর৷

তিনি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়ন নিদানিয়া দুইমুয়া এলাকায় তাঁর বাড়ির পাশে খালি জায়গায় তরমুজ চাষ শুরু করেন৷ তিনি ইউটিউব থেকে সহযোগিতার পাশাপাশি একজন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শও নেন৷ ইতিমধ্যে স্থানীয় বাজার ও অনলাইনে দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন৷ আরও ৫০ হাজার টাকার চেয়ে বেশি বিক্রি হতে পারে৷

পশ্চিম দিকে সমুদ্র সৈকতে পূর্বদিকে পূর্ব পাহাড়। মাঝখানের ১ কানি বা ১০ শতক খালি জমিতে তরমুজ চাষে সফল জসিম৷ এই জমি শুধু বর্ষার সময়েও তেমন ধান হয় না৷ বালি জায়গায় তেমন পানি না থাকাতে এই সময়ে খালি থেকে যায়৷ তিনি সেখানেও সফল হয়েছেন তিনি৷

সরজমিনে গিয়ে যা দেখা যায়, সারি সারি তরমুজ গাছে, পড়ে আছে বড় বড় তরমুজ। যেটির বয়স ৬০ দিনের বেশি, সেটি ছিঁড়ে নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে তিনি৷ সেখানে থেকে বস্তা ভরে নিয়ে যাওয়া হবে স্থানীয় বাজারে৷ আর কিছু অনলাইনে বিক্রি করা হবে৷ দিনরাত পরিচর্যা করেন জসিম৷

তরুণ উদ্যোক্তা জসিম উদ্দিন শামিম জানান, বেকার বসে না থেকে খালি জমিতে ইউটিউব দেখে দেখে তরমুজ চাষ করে আড়াই মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা উপার্জন করেছি৷ মজিতে রোপণ করা হয় ৩ হাজার চারা৷ কয়েকটি ছাড়া বাকী সবগাছে তরমুজ ধরেছে৷ প্রতিটি তরমুজ ৬ থেকে ১০ কেজি হয়েছে৷ এই রমজানে যে পরিমাণ চাহিদা তা পূরণ করতে পারছি না৷ প্রতিটি তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে৷ স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও তরমুজের চাহিদা আছে৷ কিন্তু প্রথমবার ছোট করে করাই চাহিদা পূরণ করতে না পারলেও মোটমুটি সন্তুষ্ট ক্রেতারা৷

জালিয়াপালং ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুনায়েদ জানান, জসিম নিজে নিজে ইউটিউব দেখে তরমুজ চাষ করেন৷ পরে তিনি কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁকে সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়৷ তরমুজ গাছে কীটনাশক ব্যবহার এবং পানি দেওয়ার নিয়মকানুন সবকিছু দেখিয়ে দেওয়া হয়৷ তিনি নিয়মকানুন মেনে চলাতে সফল হয়েছে৷

জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, আমার এলাকার ছেলে জসিম৷ সে চাকরির কথা চিন্তা না করে যে উদ্যোক্তা হয়েছে তাতে এলাকাবাসী খুশি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী জানান, আমাদের সমাজে বেকারত্ব দূর করতে হলে উদ্যোক্তা হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই৷ তাই আমরা চাকরির পিছনে না ছোটে নিজে নিজে উদ্যোক্তা হয় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করি৷ আজ জসিম একজন সফল৷ তিনি স্বল্প খরচে তরমুজ চাষ করে অনেক টাকা লাভ করেছেন।

পাঠকের মতামত: