আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস! ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর ১৮ সেপ্টেম্বর পালন করা হচ্ছে এই দিবসটি। সারা বিশ্বে বাঁশ নিয়ে সচেতনতা তৈরিই এর উদ্দেশ্য।
বাঁশ যে পরিবেশের অকৃত্রিম বন্ধু, এটা আদতে বিশ্ববাসীর নজরেই পড়ে না। এ কারণে ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু অর্গানাইজেশন’ বাঁশের সম্ভাবনা আরও ভালোভাবে দৃষ্টিগোচর করতেই দিবসটি পালন করছে। পরিবেশ রক্ষা, টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন শিল্পের জন্য বাঁশ চাষে উৎসাহিত করা এবং ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখাই এর উদ্দেশ্য। এর সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নও এর অন্যতম লক্ষ্য।
২০০৯ সালে ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু কংগ্রেসের’ অষ্টম আসর বসেছিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে। সেখানেই ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু অর্গানাইজেশন (ডব্লিউবিও) দাপ্তরিকভাবে দিবসটির সূচনা করে। এ সংস্থার সদস্যসংখ্যা কিন্তু কম নয়—প্রায় ১০০!
দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় বাঁশের কদর আজও অটুট। মূলত ঘাস জাতের এই উদ্ভিদ নির্মাণসামগ্রী হিসেবে জনপ্রিয়, কুটিরশিল্প এবং বাদ্যযন্ত্র তৈরিতেও অতুল উপকরণ।
বাঁশ মূলত একটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ। ঘাস পরিবারের এরা বৃহত্তম সদস্য। বাঁশ গাছ সাধারণত একত্রে গুচ্ছ হিসেবে জন্মায়। এসব গুচ্ছকে বাঁশ ঝাড় বলা হয়। প্রায় ১৫০ ধরণের বাঁশ হয়ে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। শুধু আসবাব পত্র কিংবা গৃহস্থালি প্রয়োজন ছাড়াও বাঁশ ব্যবহার করা হয় খাদ্য দ্রব্য হিসেবে।
বাঁশের একাধিক পদ খাওয়া যায়। এছাড়া বাঁশের রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ। বাঁশ একটি প্রাকৃতিক শক্তির উৎস হতে পারে কারণ এটি কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।
বাঁশের মধ্যে রয়েছে ভালো পরিমাণে ফাইবার, যা পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।বাঁশের মধ্যে অনেক ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে, যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফোলেট, নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাঁশের মধ্যে রয়েছে ফসফরাস, নাইট্রোজেন এবং পটাসিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। বাঁশের ডাল ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে সেদ্ধ করে সবজি হিসেবে খাওয়া যায় , বাঁশ কাণ্ডের আচার খাওয়া যায়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) গ্লোবাল ব্যাম্বু রিসোর্সেস প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায় চীনে। চীনে আছে ৫০০ প্রজাতির বাঁশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে রয়েছে ২৩২ প্রজাতি। আর ৩৩ প্রজাতির বাঁশ থাকা বাংলাদেশ আছে তালিকার অষ্টমে।
বাঁশ শব্দটিকে নিয়ে বাঙালির হাসিমশকরার শেষ নেই। ‘বাঁশ দেওয়া’ কথাটি নিয়ে বাঙালি তার চায়ের আড্ডায় হাসির হররা তোলে। ‘বাঁশ’ শব্দটিকে অবশ্য আরও নানা আঙ্গিকে ব্যবহার করা হয়।
তবে, এই আশ্বিনে বাঁশ বাঙালির কাছে সম্পূর্ণ অন্য অনুষঙ্গ বয়ে আনে। বাড়ির বাইরে ক্লাবের সামনে মাঠে বা ক্লাবে রাস্তার ধারে বাঁশের স্তূপ দেখে এখন বাঙালির মন আনন্দে নেচে ওঠে। কেননা এ সব বাঁশ প্যান্ডেল তৈরির বাঁশ। আর কদিন পরেই পুজো। বাঙালির সব চেয়ে বড় উৎসব।
পাঠকের মতামত: