তহবিলসংকটের কারণে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি)। আগামী মাসেই রোহিঙ্গাদের সহায়তা ১৭ শতাংশ কমবে। এর পরও তহবিল না পেলে সহায়তা আরো কাটছাঁট করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
এদিকে সম্ভাব্য নতুন এই সংকটের বিষয়ে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের দুজন বিশেষজ্ঞ। তাঁদের একজন মাইকেল ফাখরি জাতিসংঘের খাদ্য অধিকারবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার। অন্যজন মিয়ানমারে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ।
আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে সাড়ে ১২ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। ডাব্লিউএফপি ওই তহবিলের জন্য বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করেছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ মাইকেল ফাখরি ও টম অ্যান্ড্রুজ গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যের রেশন কমানো এড়াতে অবিলম্বে তহবিলের জন্য আবেদন করেছেন। বাংলাদেশে আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষাকারী খাদ্য সহায়তা কমানো হলে বিপর্যয়কর পরিণতি সম্পর্কেও তাঁরা সতর্ক করেছেন।
বিশেষজ্ঞ দুজন বলেন, রেশন কমানোর পরিকল্পনা আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের উদ্যোগের জন্য অর্থায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার বিধ্বংসী পরিণতি। রোজার ঠিক আগে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য রেশন কমানো হবে। এটা অযৌক্তিক। তাঁরা বলেন, এই কাটছাঁটের প্রতিক্রিয়া হবে তাত্ক্ষণিক এবং দীর্ঘস্থায়ী। কারণ উদ্বাস্তুরা তাদের পুষ্টির প্রয়োজনের জন্য এই সহায়তার ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, রোহিঙ্গা শিবিরে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, কিশোরী এবং গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরাসহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের ওপর খাবার কমার বড় প্রভাব পড়বে। মাইকেল ফাখরি ও টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জেনোসাইড থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গারা এখন তাদের খাদ্যের মতো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার শিকার হতে যাচ্ছে। খাদ্য সহায়তা কমে যাওয়া শরণার্থীদের আরো মরিয়া করে তুলতে পারে।
পাঠকের মতামত: