কক্সবাজার, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

১৫ দিনে চা-বাগানে দেড়শ কোটি টাকার ক্ষতি

চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ১৫ দিনের ধর্মঘটে চা বাগানের দেড়শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে শ্রমিকরা কাজ না করায় প্রায় ৭৫ লক্ষ কেজি চা পাতা উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ বিষয়ে চা সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ ক্ষতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তারা জানিয়েছেন, এখন চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। এসময়ে যে চা উৎপাদন হয় তা বাকি বছরের প্রায় অর্ধেকের সমান।

ক্ষতির বিষয়ে শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের সহকারী মহাব্যবস্থাপক প্রশান্ত কুমার সরকার জানান, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে তার বাগানের ২ লক্ষ কেজি চা পাতা নষ্ট হয়েছে। প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা ক্ষতি ধরে ১৫ দিনে ৩০০ কোটি টাকা ও ৩ কোটির উপরে সকল চা বাগানে কাঁচাপাতা নষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বাগানের অন্য কাজ বন্ধ রেখে পুরুষ ও মহিলা সকল শ্রমিককে পাতা উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। পাতা অধিক বড় হয়ে যাবার কারণে চায়ের গুণগত মান কমে যাবে, তবে গুণগত মান ধরে রেখে চা পাতা উৎপাদন করছেন তারা।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত চা বাগানের যে ধর্মঘট, তার কারণে চা বাগানের বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা যে তথ্য পেয়েছি, চা শিল্পে এই ধর্মঘটের কারণে প্রায় একশ পঞ্চাশ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এই আগস্ট মাসে চা বাগান সমূহে দেশে প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়। কিন্তু সেইখানে গত ১৫ দিনের ধর্মঘটের কারণে বিপুলসংখ্যক ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে চা বাগান মালিকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, মালিকপক্ষকে যথাযথ সহায়তা করা হবে। ইতোমধ্যে এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মালিকপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। চা শিল্প উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত চা বাগান ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) ১২টি এবং চা বোর্ডের ৩টি মিলিয়ে ১৫টি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগেই রয়েছে ১২টি বাগান।

চা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের ১৬৭টি চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের ৬৫ হাজার হেক্টর জমি থেকে ৯৬ দশমিক ৫০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যা দেশের চা শিল্পের ১৬৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এবছর চা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। বিশ্বে চা উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম। জাতীয় অর্থনীতিতে চা শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। জিডিপিতে চা খাতের অবদান ০ দশমিক ৮১ শতাংশ।’

পাঠকের মতামত: