এম ফেরদৌস, উখিয়া::
ছাত্রদের গনঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের পতন হওয়ার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলে চারদিকে লুটপাট, চাদাবাজি, দখলবাজি চলছে চারদিকে। এমন পরিস্থিতিতে উখিয়ার বিভিন্ন জায়গাতেও এসব দখলবাজি,চাদাঁবাজির মতো অপরাধ কার্যক্রম চালাতে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, কুতুপালং এলাকার মৃত বখতিয়ার আহমেদের মালিকানাধীন বখতিয়ার মার্কেটে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দিলে জোরপূর্বক মার্কেট দখল করে নিবে বলে হুমকিও দেন এই সংঘবদ্ধ চক্র।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কুতুপালং নুর আলম মার্কেটের দক্ষিণে ১০ শতক জমি বখতিয়ার আহমেদ মৃত্যুর আগে ২০১৫ সালে উখিয়া ভুমি অফিসকৃত ৯৮৫ নং রেজিস্ট্রার্ড দলিল মূলে স্ত্রীসহ তারা দুজনই প্রাপ্ত মালিক হন। যার বিএস ১২৪৯ নং খতিয়ান। সে জমিটি বখতিয়ার আহমদ ও তার স্ত্রী শাহীনা আকতারের নামে সৃজিত বিএস ১৩৫০ নং খতিয়ান চুড়ান্ত প্রচার আছে এবং সেই সুত্রে জমিটির প্রকৃত মালিক বখতিয়ার আহমেদ ও তার স্ত্রী শাহীনা আকতার।
সেই সুবাধে অই জমিতে বখতিয়ার আহমেদ নিজে সেমি-পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের ভাড়া দেন। দোকান ঘরগুলো দেখাশোনা ও ভাড়ার টাকা তুলতেন বখতিয়ার আহমেদ নিজে।
২০২০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করিলে পরিবারের পক্ষ থেকে অই দোকান ঘরের ভাড়া ও দেখভালের দায়িত্ব নেন বখতিয়ার আহমদের ছোট ছেলে কায়সার উদ্দিন। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগষ্ট পর্যন্ত কেউ অই দোকান ঘর থেকে চাঁদা দাবি বা অন্যন্য বিরোধের অভিযোগ আনেনি। কারণ এলাকার সকলেই জানেন এই জমি এবং মার্কেট মৃত বখতিয়ার আহমেদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ও ভোগদখলে রয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
হঠাৎ করে গত ১৩ই সেপ্টেম্বর রাত ১১ টার দিকে টিএন্ডি লম্বাঘোনা এলাকার রশিদ আহমেদ প্রকাশ কালা রশিদ ও তার ছেলে শাহা আলম, কুতুপালং এলাকার মির আহমদের ছেলে মোহাম্মদ হোছেনসহ অজ্ঞাত ১৫/১৬ জন লোক বখতিয়ার আহমদের মালিকানাধীন মার্কেটে এসে অতর্কিত অবস্থায় হৈ-হুল্লাট করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এমন খবর শুনে বখতিয়ার আহমেদের ছোট ছেলে কায়সার উদ্দিন ঘটনাস্থনে গেলে তাকে অপ-হরন করার চেষ্টা চালিয়ে তার সাথে হাতাহাতি করেন সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় লোকজন চলে আসলে তাকে এলোপাতাড়ি লাথি কিল ঘুষি মেরে নগদ ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে বলেন তারা।
পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে চাঁদা না দিলে তাকে হত্যা করে মার্কেট দখলে নিবে বলে হুমকিও দেন এই সন্ত্রাসবাহিনী।
এসব ঘটনার বিবরণ দিয়ে কায়সার উদ্দিন বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয়রা বলছে, এসব চাঁদাবাজি, দখলবাজি করে কিছু সন্ত্রাস প্রকৃতির লোক এলাকার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলতেছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ না নিলে এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এসব চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি জানান এলাকাবাসীর।
সচেতন মহল বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এসব সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি, চাদাবাজি, দখলবাজি করে যাচ্ছে। প্রশাসনের তৎপরতা জোরদার করে এসব আইন অমান্যকারী লোকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রশিদ আহমেদ ও তার ছেলে শাহা আলম, কুতুপালংয়ের নুর হোসেনসহ কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয় প্রতিবেদক।
এদিকে কায়সার উদ্দিন জানায়, আমার পিতার ওয়ারিশ মূলে আমি এই মার্কেটের মালিক। আমার মার্কেট থেকে চাঁদা দাবি করে তারা আমার উপর হামলা করেছে। তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি হওয়ার সুযোগ নেই। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানার প্রশাসনকে অবগত করেছি।
উখিয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম হোসেনের স্পষ্ট বক্তব্য অপরাধী যেই হউক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। উখিয়া থানার পুলিশ বাহিনী মাঠে সক্রিয় আছে। এসব অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: